বিষাদসিন্দু:
নৌকার বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করায় ইতোমধ্যে বহু নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে। তবে, ব্যতিক্রম দেখা গেছে কেবল বন্দরের কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান ও খাঁন মাসুদের ক্ষেত্রে। তারা সরাসরি কালাগাছিয়াতে লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি জেলা আওয়ামী লীগ। ফলে, এ নিয়ে জেলা কমিটির নেতাদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানেই শুরু হয়েছে সমালোচনা।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বলছে, দুলাল প্রধান ও খাঁন মাসুদ ওসমান পরিবারের রাজনীতি করে। তারা দলের চেয়েও ব্যক্তি রাজনীতিটাই করে থাকে বেশি। এক কথায়, ওসমান পরিবারের বাইরে তারা কখনই যান না। এবং তারা যে নৌকা ছেড়ে লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেছিলো সেটিও করেছিলেন ওসমান পরিবারের নির্দেশনায়। ফলশ্রুতিতে অন্যরা বহিস্কার হলেও তারা দলে রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
সূত্র বলছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদলও ওসমান পরিবারের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত নিযেছে বলে নজির নেই। মূলত এ কারণে তারা দুলাল প্রধান ও খাঁন মাসুদের বিরুদ্ধে কোনো রকম সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি অথবা পারেনি।
সূত্র আরও জানায়, কাউন্সিলর দুলাল প্রধান মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি সদ্য সমাপ্ত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কলাগাছিয়ায় নৌকার মনোনীত প্রার্থী বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধানের পক্ষে না নেমে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী তথা সাংসদ সেলিম ওসমানের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন প্রধানের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছিলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকাতেও সংবাদ প্রকাশ হয়েছিলো। একই কাজ করেছিলেন খাঁন মাসুদও। সম্প্রতি নির্বাচন পরবর্তী সাংসদ সেলিম ওসমানের সাথে নির্বাচিতরা সাক্ষাৎ করতে গেলে দেলোয়ার প্রধান নিজেও তার বক্তব্যে দুলাল ও খাঁন মাসুদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছিলেন।
এদিকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগে রূপগঞ্জে ষোল, বন্দরে একজন, সদরে একজনকে বহিস্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু এত এত মানুষকে বহিস্কার করা হলেও দুলাল প্রধান ও খাঁন মাসুদকে কেন বহিস্কার করা হলো না, এ নিয়ে চলছে সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে, জেলা আওয়ামী লীগের কর্ত ব্যক্তিদের কর্তব্য পরায়নতা নিয়েও।
প্রসঙ্গত, কাউন্সিলর দুলাল প্রধান ইতোপূর্বে ফেনসিডিলসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আটক হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শেষ করে তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দাখিল করেছে। যদিও দুলাল প্রধানের দাবি, তিনি নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। অন্যদিকে খাঁন মাসুদ সম্পর্কেও স্থানীয়দের মাঝে নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ দখল, অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। তিনি আসছে সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হতেও বেশ প্রস্তুতি শুরু করেছেন।